উত্তর-পূর্ব সীমান্তে সামরিক মহড়ায় ভারতীয় সেনা
উত্তর–পূর্ব সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করতে এবার কড়া প্রস্তুতি নিয়েছে ভারতীয় সেনা ও বিমানবাহিনী। পূর্ব সীমান্তে সামরিক মহড়া ও নিরাপত্তা তদারকির জন্য নোটাম বা সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
৩০ নভেম্বর থেকে ভারতীয় সেনা, নৌসেনা ও বায়ুসেনা একযোগে মহড়া শুরু করবে, যা চলবে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত। এবার মিয়ানমার, ভুটান ও বাংলাদেশ সীমান্ত জুড়ে বিস্তৃত মহড়া পরিচালিত হবে। সেনা এবং বায়ুসেনা একযোগে অংশগ্রহণ করবে। মহড়ায় রাফাল, সুখোই ধরনের শক্তিশালী যুদ্ধবিমান ওড়ানো হবে। পাশাপাশি সশস্ত্র বাহিনীর সব থেকে ভয়ংকর ট্যাংক মোতায়েন করা হবে।
মহড়াটি তিন ধাপে অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম ধাপ হবে ৬ ও ২০ নভেম্বর, দ্বিতীয় ধাপ ৪ ও ১৮ ডিসেম্বর এবং শেষ ধাপ ২০২৬ সালের ১ ও ১৫ জানুয়ারি। এই সময়ে সীমান্তবর্তী আকাশপথে বেসামরিক বিমান চলাচলে নির্দিষ্ট বিধিনিষেধ থাকবে।
প্রতিরক্ষা দফতরের সূত্র জানিয়েছে, আসাম, অরুণাচল প্রদেশ, নাগাল্যান্ড, মণিপুর, মিজোরাম ও ত্রিপুরার সীমান্ত অঞ্চলে এই মহড়া অনুষ্ঠিত হবে। যৌথ তত্ত্বাবধানে যুদ্ধবিমান, হেলিকপ্টার, নজরদারি ড্রোন ও আধুনিক রাডার ব্যবহার করা হবে। মহড়ার মূল লক্ষ্য, সীমান্তে প্রতিরক্ষা প্রস্তুতি পরীক্ষা, দ্রুত প্রতিক্রিয়া ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং জরুরি অবস্থায় সমন্বিত অভিযান পরিচালনার দক্ষতা যাচাই।
সেনার এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, ‘এই মহড়া নিয়মিত প্রশিক্ষণের অংশ হলেও বর্তমান আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি ও সীমান্তে অস্থিরতা বিবেচনায় এর গুরুত্ব অনেক। উত্তর–পূর্ব সীমান্তে আমাদের প্রতিরক্ষা প্রস্তুতি এখন আরও গতিশীল ও প্রযুক্তিনির্ভর।’
সম্প্রতি ভারত–চীন সীমান্তে টহল বাড়ানো হয়েছে। পাশাপাশি, মায়ানমার সীমান্তে অস্থিরতা এবং বাংলাদেশ সীমান্তে অনুপ্রবেশ প্রতিরোধে নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটেই নতুন সতর্কতা জারি করেছে ভারতীয় সেনা ও বিমানবাহিনী। প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকদের মতে, এটি শুধু সামরিক মহড়া নয়, বরং একটি কূটনৈতিক বার্তা—ভারত পূর্ব সীমান্তে সম্পূর্ণ প্রস্তুত এবং প্রতিপক্ষকে সতর্ক করছে।
নোটাম হলো আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বিমান সতর্কবার্তা। নির্দিষ্ট সময়ে যদি কোনও অঞ্চলে সামরিক মহড়া, ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা বা বিমান চলাচলে সীমাবদ্ধতা থাকে, তবে পাইলট ও বিমান সংস্থাকে আগাম জানানো হয়। এর উদ্দেশ্য হলো : বেসামরিক বিমান চলাচল ও সামরিক কার্যক্রম উভয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
সূত্রের খবর, এই মহড়ায় উত্তর–পূর্বের সব বিমানঘাঁটি এবং সীমান্তরক্ষী স্কোয়াড্রন অংশ নেবে বলে জানা গেছে।

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: