কমিশন সংলাপে মুক্তিজোটের ৯ প্রস্তাব
সুষ্ঠ, অংশ গ্রহণমুলক ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্বাচন কমিশন আয়োজিত আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত সংলাপে মুক্তিজোট ৯টি প্রস্তাব দিয়েছে।
১৭ই নভেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ তারিখে মুক্তিজোটের সংগঠন প্রধান আবু লায়েস মুন্নার নেতৃত্বে জয়েন্ট সংগঠন প্রধান আমিনা খাতুন ওমি শিকদার ও কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহজামাল আমিরুল কমিশন সংলাপে উপস্থিত ছিলেন।
আবু লায়েস মুন্না লিখিত প্রস্তাবনায় সকল প্রার্থীদের একই মঞ্চে ইশতেহার ঘোষণা, জোটবদ্ধভাবে নির্বাচন করলেও নিবন্ধিত দলকে নিজ প্রতীকে নির্বাচন, নির্বাচনী পোষ্টার বন্ধ করার আইন আচরণ বিধিতে যুক্ত করা এবং প্রবাসীদের ভোট দানের ব্যবস্থা করায় মুক্তিজোটের পক্ষ থেকে বর্তমান অন্তর্বর্তী কালীন সরকার এবং প্রস্তাবকারী হিসেবে নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি মুক্তিজোটের পক্ষ থেকে জাতীয় নির্বাচনের মত বিশাল কর্ম যজ্ঞকে যথাযথভাবে সম্পন্ন করা এবং সুষ্ঠ ও অংশগ্রহণমুলক নির্বাচনের প্রশ্নে ৯টি প্রস্তাবে বলেন-
১. স্বাধীনতার ৫৪ বছর পার করলেও এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের সংবিধান-এর ১১৮ নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন গঠনের উক্ত আইনটি হয়নি। তাই নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে ১১৮ নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের আইনটি পাশ করতে হবে।
২. কমিশনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সমন্বয়ে ‘জাতীয় পরিষদ’ গঠন করে, জাতীয় পরিষদে আলোচনার মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনের বিধি-বিধান সংস্কার করতে হবে।
জাতীয় পরিষদ গঠনঃ কমিশনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের সমন্বয়ে জাতীয় পরিষদ গঠন করতে হবে। জাতীয় পরিষদের সাধারণ কর্ম নির্বাহের জন্য আহ্বায়ক হিসেবে নির্দিষ্ট থাকবেন পদাধিকার বলে মাননীয় প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং সদস্য হিসেবে অন্যান্য কমিশনারগণ। আর উক্ত জাতীয় পরিষদের প্রধান তথা চূড়ান্ত নির্দেশনাদানকারী কর্তৃত্বে থাকবেন মহামান্য রাষ্ট্রপতি।
৩. নির্বাচন কমিশনের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতায় নির্বাচনকালীন সময়ে তথা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার সাথে সাথে “স্বরাষ্ট্র এবং জনপ্রশাসন” মন্ত্রণালয় নির্বাচন কমিশনের অধীনে দেয়ার সুনির্দিষ্ট আইন পাশ করতে হবে। কারণ নির্বাচনকালীন সময়ে নির্বাচন কমিশন মূখ্যতঃ স্বরাষ্ট্র ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় হয়ে সরকারমুখীনতায় ঝুলে থাকে। আমরা দেখেছি বিগত নির্বাচন কমিশন ডিসিদের কাছে সহায়তা চাইছে এবং তা দেওয়ার জন্যও ডিসিরা কথা দিচ্ছেন। এরকম সহায়তার কথা বলছি না। মুক্তিজোট দাবী করছে— স্বরাষ্ট্র ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে সরাসরি নির্বাচন কমিশনের অধীনে আনতে হবে; নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন ও শক্তিশালী করতে আইন সংশোধন করতে হবে যাতে উক্ত মন্ত্রণালয় অধীভুক্ত সকল কর্মচারী কর্মকর্তা নির্বাচনকালীন সময় নির্বাচন কমিশনের আদেশ নির্দেশ মেনে চলতে বাধ্য থাকে।
৪. যেহেতু নির্বাচন অনুষ্ঠান করার দায়ীত্বে থাকে নির্বাচন কমিশন তাই জেলা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকেই রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ দিতে হবে।
৫. নির্বাচনে প্রতিনিধিত্ব করার জন্য যারা আবেদন করবেন (এমপি, মন্ত্রী, স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধি), তিনি ও তাদের ফার্স্ট ব্লাড (বাবা-মা, স্বামী-স্ত্রী, সন্তান) এর কারও অন্য দেশের নাগরিকত্ব থাকলে উক্ত আবেদন অযোগ্য বলে বিবেচিত হবে, এ আইন আরপিওতে যুক্ত করতে হবে।
৬. নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা রোধে কার্যকরী আইন প্রণয়নঃ নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার পূর্বশর্ত ভোটারদের প্রভাবমুক্ত ভোটদানের পরিবেশ নিশ্চিত করা। ভোটাররা যাতে নির্ভয়ে নিজ নিজ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন, তার জন্যে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা রোধে কার্যকর আইন প্রণয়ন করতে হবে।
৭. আরপিও সংশোধন করে জাতীয় নির্বাচনের জামানত ২০ হাজার টাকায় নির্দিষ্ট করতে হবে।
৮. তফশিলের পূর্বে অবৈধ ও বৈধ সকল অস্ত্র উদ্ধার এবং অর্থ ও পেশী শক্তি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
৯. নির্বাচনের ৭ দিন পূর্বে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে এজেন্ট নিয়োগ সংক্রান্ত ফরম তথা সকল কাগজপত্র প্রদান করতে হবে।

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: