‘আমজনতার দলকে’ পুনর্বিবেচনার দাবি ইশরাকের
বিএনপি চেয়ারপার্সনের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা কমিটির বিশেষ সহকারী ইশরাক হোসেন ‘আমজনতার দল’-এর নিবন্ধন প্রক্রিয়া অবিলম্বে পুনর্বিবেচনা করার দাবি জানিয়েছেন।
তিনি অভিযোগ করেছেন, রাজনৈতিকভাবে ত্যাগী ও নির্যাতিত নেতা তারেক রহমানের নেতৃত্বাধীন দলটিকে নিবন্ধন না দেওয়াটা রাজনৈতিক বৈষম্যেরই প্রতিফলন। ক্ষমতাসীনদের পছন্দের দলগুলোকে বারবার বিশেষ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
রোববার (৯ নভেম্বর) আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের সামনে ‘আমজনতার দল’-এর সদস্য সচিব তারেক রহমানের দলের নিবন্ধনের দাবিতে আমরণ অনশনের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
ইশরাক হোসেন বলেন, ওয়ান-ইলেভেনের পর রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরু হলেও যারা সত্যিকার অর্থে রাজনীতির মাঠে লড়েছেন এবং আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন, তাদের প্রতি বৈষম্য করা হচ্ছে।
ইশরাক হোসেন তারেক রহমানের রাজনৈতিক সক্রিয়তা তুলে ধরে বলেন, তারেক রহমান একজন তরুণ, সক্রিয় এবং নির্যাতিত নেতা। নিরাপদ সড়ক আন্দোলনসহ প্রতিটি গণ-আন্দোলনে তিনি রাজপথে ছিলেন। তার ওপর একাধিকবার হামলা হয়েছে, কিন্তু তিনি পিছু হটেননি। এমন একজন নেতার দলকে যদি নিবন্ধন না দেওয়া হয়, তবে সেটি কেবল প্রশাসনিক ব্যর্থতা নয়, রাজনৈতিক পক্ষপাতও বটে।
তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি যেসব নতুন দল নিবন্ধন পেয়েছে, তাদের অনেকেরই রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের ইতিহাস বা সাংগঠনিক কাঠামো নেই। এমন দলগুলোর নিবন্ধন পাওয়ায় জনগণের মধ্যে সন্দেহ তৈরি হয়েছে।
উদাহরণ দিতে গিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি, আসল বিএনপি, তৃণমূল বিএনপি, কিংবা ভারতীয় জনতা পার্টির আদলে করা দল – এসব নাম শুনলেই বোঝা যায়, এটি রাজনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে কতটা বিচ্ছিন্ন। এমন দলগুলোর কোনো কার্যক্রম নেই, অফিস পর্যন্ত অনেক সময় রান্নাঘরের ভেতরে দেখানো হয়েছে। অথচ তারা নিবন্ধন পেয়ে যাচ্ছে।
ইশরাক দাবি করেন, এসব দলের মধ্যে অনেকেই আদালতের নির্দেশের কথা বলে নিবন্ধন পেলেও, নির্বাচন কমিশনের প্রতিবেদন অনুযায়ী তারা পূর্ণ শর্ত পূরণ করেনি। তিনি প্রশ্ন রাখেন, তারপরও তারা নিবন্ধন পেল। কিন্তু যারা সত্যিকারের রাজনৈতিক সংগ্রাম করেছে, যেমন তারেক রহমান, তারা বঞ্চিত। এটা কি ন্যায়সংগত?
ইশরাক হোসেন স্পষ্ট করে বলেন, তিনি কোনো দলের নিবন্ধন বাতিলের পক্ষে নন, বরং পুরো নিবন্ধন প্রক্রিয়াটাই পুনর্গঠন করা হোক। তিনি নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানান— আমরা চাই, নির্বাচন কমিশন সব দলকে আহ্বান জানিয়ে পুনঃনিবন্ধনের সুযোগ দিক। এতে বোঝা যাবে, কারা প্রকৃত যোগ্য এবং কারা কেবল নামমাত্র কাগুজে দল। এই প্রক্রিয়াই জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পারে।
তিনি কমিশনের ভেতরে থাকা কিছু কর্মকর্তার অনিয়মের অভিযোগও তুলে ধরে বলেন, যে কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে যাচাই-বাছাই করেন, তাদের মধ্যেও পক্ষপাতের অভিযোগ এসেছে। আমরা চাই, কমিশন এসব খতিয়ে দেখুক।
তিনি বলেন, আমরা শুধু বলছি—যারা যোগ্য, যারা রাজনৈতিকভাবে মাঠে আছে, যাদের সংগঠন আছে, তাদেরকে সুযোগ দেওয়া হোক। আর যারা শুধু কাগজে-কলমে দল, তাদের নিয়ে জাতি বিভ্রান্ত হোক সেটা আমরা চাই না।
সাংবাদিকদের স্বাধীনতা প্রসঙ্গে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, আপনারা আজও পুরোপুরি স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছেন না। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি, আগামী নির্বাচনের পর আপনারা স্বাধীন হবেন। জনগণের আস্থা ফেরাতে নির্বাচন কমিশনের উচিত হবে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ প্রক্রিয়ায় দলগুলোর নিবন্ধন যাচাই করা বলে জানান তিনি।

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: