রায় দ্রুত কার্যকরের দাবি শহীদ আবু সাঈদের পরিবারের
ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডের রায় দ্রুত কার্যকরের দাবি শহীদ আবু সাঈদের পরিবারের।
এ রায় ঘোষণার পর যেন স্বস্তি ও আনন্দের ঢেউ রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার মদনখালি ইউনিয়নের জাফরপাড়া বাবনপুর গ্রামে। এটা জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ আবু সাঈদের গ্রাম। আবু সাঈদের পরিবার, আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীরা সকাল থেকেই টেলিভিশনের সামনে বসেছিলেন রায় ঘোষণার অপেক্ষায়।
মৃত্যুদণ্ডের রায় উচ্চারণের সঙ্গে সঙ্গেই গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে খবর। কেউ হাত তুলে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করেন, কেউবা কান্নায় ভেঙে পড়েন। অনেকে ছুটে যান আবু সাঈদের কবরে। সেখানে দাঁড়িয়ে তারা আবু সাঈদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং রায় দ্রুত কার্যকর করার জন্য প্রার্থনা করেন।
আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে প্রথমেই হাত তুলে প্রার্থনা করে বলেন, 'হে আল্লাহ, তুমি মহান। তুমি আমাদের ন্যায়বিচার পাইয়ে দিয়েছো।'
তিনি বলেন, 'রায়ে আমি সন্তুষ্ট। আরও বেশি খুশি হবো যদি রায় দ্রুত কার্যকর হয়। জীবদ্দশায় এই রায় কার্যকর দেখতে চাই।'
তিনি আরও বলেন, 'আমার ছেলে খুবই মেধাবী ছিল। বেঁচে থাকলে আমাদের মুখে আজ আরও অনেক হাসি থাকত। খুনি হাসিনার নির্দেশেই আমার সন্তানকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।'
আবু সাঈদের মা মনোয়ারা বেগম কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। চোখ মুছতে মুছতে বলেন, 'খুনি হাসিনার বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত। আল্লাহর কাছে দোয়া করি, রায় যেন তাড়াতাড়ি কার্যকর হয়। সরকারকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।'
আবু সাঈদের বড় ভাই আবু হোসেন বলেন, 'রায় হয়েছে ঠিকই, কিন্তু কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত স্বস্তি পাচ্ছি না। তবু আদালত ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করেছে, এটাই আমাদের সান্ত্বনা।'
তার আরেক ভাই ও আবু সাঈদ হত্যা মামলার বাদী রমজান আলী বলেন, 'আশা ছিল ন্যায়বিচার পাব। আদালত সেই ন্যায়বিচার দিয়েছেন। খুনি হাসিনার মৃত্যুদণ্ড রায় ঘোষণা করেছেন। ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থান সফল না হলে আমরা কেউই আজ নিরাপদে থাকতে পারতাম না। আসামিকে দেশে ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকর করার দাবি জানাচ্ছি।'

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: